শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০১:২২ পূর্বাহ্ন

টাকা জলিরপাড় ইউপি চেয়ারম্যানের পকেটে, শখের গরু বিক্রি করেও ঘর পাননি বিধবা

টাকা জলিরপাড় ইউপি চেয়ারম্যানের পকেটে, শখের গরু বিক্রি করেও ঘর পাননি বিধবা

বাংলার নয়ন সংবাদঃ
জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য পালিত শখের গরু বিক্রি করা টাকা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের ভাইকে ঘুস দিয়েও প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের জমিসহ ঘর বরাদ্দ না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের ফুলকুমারী গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা আমোদিনি বৈরাগী (২৫)। শুধু তাই নয় ঘুসের টাকা ফেরত চাওয়ায় হুমকি-ধমকি সহ নানাবিধ হয়রানির শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগী ওই নারী ও তার পরিবার।

সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, গত ভাদ্র মাসে জলিরপাড় ফুলকুমারী গ্রামের বিধবা মায়ের সংসারে ঠাঁই নেওয়া স্বামী পরিত্যক্তা ভূমিহীন আমোদিনী বৈরাগী জলিরপাড় ইউপি চেয়ারম্যান মিহির কান্তি রায় ও ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য অসীম সরকারের ভাই অজিত সরকারকে গরু বিক্রির টাকা সহ ধার-দেনা করে নগদ ৭০ হাজার টাকা তুলে দেন। এছাড়াও ৪০ দিনের কর্মসূচিতে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়ারম্যানকে দেওয়ার কথা বলে আমোদিনী বৈরাগীর নিকট থেকে দুই হাজার টাকা ঘুষ নেন অজিত সরকার। প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া জমিসহ বিনামূল্যের ঘর বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে শুধু ওই পরিবার নয় আরো একাধিক পরিবারের নিকট থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই চক্রের বিরুদ্ধে।

এবিষয়ে ভুক্তভোগীর মা ফুলমালা বৈরাগী (৬০) জানান, আমার মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা আমোদিনী বৈরাগী তার একমাত্র নাবালক পুত্রকে নিয়ে আমার ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। আশ-পাশের বিভিন্ন ক্ষেত-খামারে মুজুরী খেটে ও গরু বিক্রির টাকা মিহির চেয়ারম্যান ও সাবেক মেম্বর অসীম সরকারের ভাই অজিত সরকারের হাতে গত ভাদ্র মাসে তুলে দেয়। বছর পেরিয়ে গেলেও ঘর কিংবা ঘুসের টাকা কোনটাই ফেরত দেয় না তারা। আমরা টাকা চাইতে গেলে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়াসহ নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। এছাড়াও জলিরপাড় ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য অসীম সরকারের মাছের ঘেরে এক বছরের অধিক সময় ধরে আমি, আমার ছোট ছেলে সঞ্জিত বৈরাগী (২০), বড় ছেলে শংকর বৈরাগী (৩০), মেয়ে আমোদিনী বৈরাগী সহ মোট ৪ জন কাজ করেছি। বিনিময় সে আমাদেরকে কোন পারিশ্রমিক দেয়নি। কিন্তু আমার ভূমিহীন ছেলে শংকর বৈরাগীকে থাকার জন্য একটি ঘর দিয়ে পারিশ্রমিকের টাকা ঘুসের টাকা হিসেবে কাটছাট করে নেয়।
আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট আমাদের কাছ থেকে নেওয়া ঘুসের টাকা ফেরত সহ একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এবিষয়ে জলিরপাড় ইউপি চেয়ারম্যান মিহির কান্তি রায় তিনি টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, আমি ফেসবুকে বিষয়টি জেনে অভিযুক্ত অজিত সরকারকে একদিনের মধ্যে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য বলেছি।

এব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক জলিরপাড় ইউপি সদস্য অসীম সরকার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাই অজিত সরকার ঘর দেয়ার কথা বলে যে টাকা নিয়েছে সে ব্যাপারে আমার ভাইকে মিমাংসার কথা বলা হয়েছে ।

এবিষয়ে অভিযুক্ত জলিরপাড় ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্যের ভাই অজিত সরকার ঘুস নেয়ার কথা অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, আমি কারোর কাছ থেকে কোন টাকা -পয়সা নেইনি আমার প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে ।

মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, বিষয়টি জেনে ওই ভুক্তভোগী পরিবারকে একটি ঘর দেয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved 2018 Banglarnayan
Design & Developed BY ThemesBazar.Com